![]() |
| ইন্ট্রোভার্ট বা অন্তর্মুখিতা |
অন্তর্মুখীতা হলো একটি ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্য যা উদ্দীপনার বাহ্যিক উৎসের পরিবর্তে অভ্যন্তরীণ অনুভূতির উপর ফোকাস করে।অন্তর্মুখী ব্যক্তিরা বাহ্যিক উদ্দীপনা খোঁজার পরিবর্তে অভ্যন্তরীণ চিন্তাভাবনা, অনুভূতি এবং মেজাজের দিকে বেশি মনোনিবেশ করেন।
গবেষণায় জানা গেছে যে মোট জনসংখ্যার আনুমানিক 25 থেকে 40 শতাংশ মানুষ অন্তর্মুখী বা ইন্ট্রোভার্ট হয়ে থাকেন। এটাও মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে অন্তর্মুখিতা সামাজিক উদ্বেগ বা লজ্জার মতো কোনো জিনিস নয়। একজন অন্তর্মুখী হওয়ার অর্থ এই নয় যে আপনি সামাজিকভাবে উদ্বিগ্ন বা লাজুক।
Read also: পাই দিবস কি? কেন পাই দিবস পালন করা হয়? - মায়াবী জগত।
একজন মানুষ কেন অন্তর্মুখী বা ইন্ট্রোভার্ট হয়?
কেন কিছু লোক অন্তর্মুখী এবং কিছু লোক বহির্মুখী হয় তা জানার জন্য, আপনার শরীরের শারীরবিদ্যা কী ভূমিকা পালন করে তা বোঝা গুরুত্বপূর্ণ। আপনার শরীর যেভাবে বাইরের পরিবেশে সাড়া দেয় তা আপনার বহির্মুখী এবং অন্তর্মুখীতার মাত্রা নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
গবেষণা করে দেখা গেছে এ কয়েকটি বৈশিষ্ট্য থাকলে আপনি ইন্ট্রোভার্ট বা অন্তর্মুখী মানুষ। এই কয়েকটি বৈশিষ্ট্য নিম্নে দেয়া হলো। আপনি আপনার বৈশিষ্ট্যের সাথে এই বৈশিষ্ট্যগুলো মিলিয়ে নেবেন। তাহলেই বুঝতে পারবেন আপনি অন্তর্মুখী বা ইন্ট্রোভার্ট কিনা।
Read also: বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহর কোনটি - mayabee jagat - মায়াবী জগত
১) অন্তর্মুখী বা ইন্ট্রোভার্ট বৈশিষ্ট্যের মানুষের বন্ধুর সংখ্যা খুব কম বা নেই বললেই চলে।
২) রিইউনিয়ন বা গেট টুগেদারে তারা তেমন আগ্রহ প্রকাশ করে না।
৩) কথা কম বলতে পছন্দ করে । এমন কি কথা বলার চেয়ে কথা শুনতে বেশি পছন্দ করে।
৪) কেউ ফোনে কল দিলে ফোনে কথা বলতে চায় না। অর্থাৎ ফোনের রিংটোন শেষ হয়ে গেলে যেন এদের স্বস্তির নিঃশ্বাস ঘটে।
৫) নিজের আবেগ অনুভূতি কারো সাথে প্রকাশ করতে পারে না বা প্রকাশ করতে চায় না।
৬) মানুষের চোখে চোখ রেখে কথা বলতে অস্বস্তি বোধ করে।
৭) কারো সাথে আড্ডা করতে এদের ভালো লাগেনা। আড্ডা করলেও বেশিক্ষণ ধরে আড্ডা করতে চায়না। তবে তাদেরকে যদি বলা হয় পছন্দের বিষয়ে কথা বলতে বা বক্তৃতা দিতে তাহলে তারা ঘন্টার পর ঘন্টা সেই বিষয় নিয়ে কথা বলতে পছন্দ করে।
Read also: বাসে অথবা যে কোন গাড়িতে উঠলে বমি হয় কেন? এর কারণ কি? - মায়াবী জগত।
৮) অন্তর্মুখী বা ইন্ট্রোভার্ট মানুষদেরকে সমাজের তেমন কেউ পছন্দ করে না অর্থাৎ পছন্দকারী লোকের সংখ্যা খুবই নগণ্য হয়। আশেপাশের মানুষেরা তাদেরকে অহংকারী মনে করেন।
৯) প্রতিবেশীরা এদেরকে চেনে না বা নাম ও জানেন না। অথবা এরা কোনো প্রতিবেশী কে চেনে না বা প্রতিবেশীর নামও জানে না।
১০) কাউকে ঋণ দিতে অস্বস্তিবোধ করেন এবং কারো থেকে ঋণ নিতে ও অস্বস্তি বোধ করেন।
১১) স্পটলাইট থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে চান এবং কারো দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চান না।
১২) এরা রাগ তেমন করে না তবে এর আগের তুলনায় অভিমানের মাত্রা বেশি হয়।
১৩) এদেরকে ঘরকুনোও বলা যায়। এরা ঘরে থাকতে বেশি পছন্দ। পৃথিবী ঘুরে বেড়ানোর চেয়ে ঘরে বসে টিভি দেখতে বেশি পছন্দ করে।
১৪) এদের জন্মদিনের তারিখ জানা মানুষ খুবই নগণ্য।
১৫) এদের বিশেষ দক্ষতা বা দুর্বলতা সম্পর্কে তেমন কেউ জানেন না। কারণ এরা সবাইকে তা প্রকাশ করতে চায় না।
১৬) এরা অন্যের ব্যক্তিগত বিষয়ে আগ্রহ দেখাতে চায় না।
১৭) এরা নিজেই নিজের মনের মাধ্যমে মনের একটা কল্পনার জগত তৈরি করে। আর তা নিয়ে ভাবতে পছন্দ করে।
Read also: ১০ টি আজব ও মজাদার ফ্যাক্টস যা হয়তো আপনি কখনোই শুনেননি - মায়াবী জগত
১৮) বাড়িতে অতিথি আসলে তারা বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতে আগ্রহ প্রকাশ করে। অর্থাৎ অতিথিদের সাথে কথা বলতে চায় না।
১৯) অপরিচিত কোনো ব্যক্তি বা কেউ যদি মেসেজ দেয় তাহলে সেই মেসেজের রিপ্লাই দিতে চায় না বা সংকোচ বোধ করে।
২০) নিজেকে একা রাখতে এরা বেশি পছন্দ করে। অর্থাৎ বাসে চড়লে বাসের সবচেয়ে পিছনের সিট এবং ক্লাসে গেলে ক্লাসের সবচেয়ে শেষের বেঞ্চে বসতে এরা পছন্দ করে।
২১) রাস্তায় পরিচিত কাউকে দেখতে পেলে কথা বলার চেয়ে মুখ লুকিয়ে সেখান থেকে কেটে যাওয়াকে বেশি পছন্দ করে।
২২) নিজেকে কারো পছন্দের যোগ্য বলে ভাবতে ভয় পায়।
অর্থাৎ বন্ধুরা আপনাদের মধ্যে যদি এরকম বৈশিষ্ট্য থাকে তাহলে আপনি ইন্ট্রোভার্ট বা অন্তর্মুখী।
তথ্যসূত্র:
verywellmind.com
quora.com
Keywords:
এমবিভার্ট কি, Extrovert মানে কি, অন্তর্মুখী সমস্যা কী, অন্তর্মুখী মানে কি?
এম্বিভার্ট, অন্তর্মুখী মানুষ চেনার উপায়, অন্তর্মুখী ও বহির্মুখী ব্যক্তিত্বের মধ্যে পার্থক্য, মনোবিজ্ঞান, Psychology
