আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে Join করুন! এখানে আপনি বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও রহস্য বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য জানতে পারবেন। Join Now

নোটিশ

এসো, যদি জানতে চাও!

স্বপ্নের পদ্মা সেতু | Padma Bridge | পদ্মা সেতু - মায়াবী জগত

বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশের জন্য পদ্মা সেতু হতে যাচ্ছে এর ইতিহাসের একটি সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জিং নির্মাণ প্রকল্প।
পদ্মা সেতু
পদ্মা সেতু

পদ্মা সেতু হতে যাচ্ছে ইতিহাসের একটি বড় চ্যালেঞ্জিং নিমার্ণ প্রকল্প। স্বপ্নের পদ্মা সেতু বাংলাদেশের পদ্মা নদীর উপর নির্মাণাধীন একটি বহুমুখী সড়ক ও রেল সেতু। এর মাধ্যমে মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ের সাথে শরীয়তপুর ও মাদারীপুর জেলা যুক্ত হবে। ফলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশের সাথে উত্তর-পূর্ব অংশের সংযোগ ঘটবে। বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশের জন্য পদ্মা সেতু হতে যাচ্ছে এর ইতিহাসের একটি সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জিং নির্মাণ প্রকল্প।


দুই স্তর বিশিষ্ট স্টিল ও কংক্রিট নির্মিত ট্রাস ব্রিজটির ওপরের স্তরে থাকবে চার লেনের সড়ক পথ এবং নিচের স্তরটিতে থাকবে একটি একক রেলপথ। পদ্মা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা নদীর অববাহিকায় ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্পান ইতিমধ্যে বসানো সম্পন্ন হয়েছে, ৬.১৫০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এবং ১৮.১০ মিটার প্রস্থ পরিকল্পনায় নির্মিত হচ্ছে দেশটির সবচেয়ে বড় সেতু। পদ্মা সেতু নির্মাণকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি।


Read also: ইউক্রেনে যুদ্ধের এক মাস.....


সবকিছু ঠিক ঠাট থাকলে ২০২২ সালের জুনে পদ্মা সেতু উদ্বোধন করা হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।


পদ্মা সেতু নির্মাণ শুরুর আগে ছিল অনেক বাধা। ছিল অর্থ সংস্থান নিয়ে অনিশ্চয়তা। দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় ঋণ প্রস্তাব বাতিল করেছিল বিশ্বব্যাংক। বিশ্বের অন্যতম খরস্রোতা নদী পদ্মা। এর তলদেশে মাটির স্তরের গঠনও জটিল। এসব বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে পদ্মা সেতু। এমনকি করোনা পরিস্থিতিতে নির্মাণকাজ থেমে থাকেনি।


পদ্মা সেতু শুধু রড, সিমেন্ট ও পাথরের সেতু নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে ১৬ কোটি মানুষের আবেগ। চ্যালেঞ্জকে জয় করার অদম্য স্পৃহা এবং আগামীতে দেশের অর্থনীতিতে অপার সম্ভাবনার হাতছানি।


২০১২ সালের ২৯ জুন দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ১২০ কোটি ডলারের ঋণ প্রস্তাব বাতিল করে বিশ্বব্যাংক। এ প্রকল্প থেকে সরে যায় এডিপি, জাইকা এবং আইডিবির মতো উন্নয়ন সহযোগীরাও।


এতে পদ্মার আকাশে দেখা দেয় কালো মেঘের ঘনঘটা। ওই সময়ে প্রকল্পটির ব্যয় ছিল প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা। যা ওই বছরের মোট বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির ৫০ শতাংশ। ফলে নাগালের বাইরে চলে যায় পদ্মা সেতু বাস্তবায়নের স্বপ্ন। পরের ইতিহাস সবার জানা। সব বাধা উপেক্ষা করে শেষ পর্যন্ত নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের দুঃসাহসিক চ্যালেঞ্জ নেয় আওয়ামী লীগ সরকার।


Read also: ইন্ট্রোভার্ট বা অন্তর্মুখী বলতে কী বোঝায়?


বিশ্বব্যাংক প্রকল্প থেকে সরে যাওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে ২০১২ সালের ৮ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদ অধিবেশনে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেন। বাজেট অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে কোন কোন খাত থেকে পদ্মা সেতুর নির্মাণ ব্যয় মেটানো হবে তা বিস্তারিত তুলে ধরেন তিনি। পরদিন প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, প্রাথমিকভাবে দেশীয় অর্থায়নে পদ্মা সেতুর কাজ শুরু হবে৷


অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এ সেতু বাস্তবায়ন হলে অর্থনীতিতে সরাসরি এর সুফল আসবে। জানতে চাইলে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, পদ্মা সেতুর মাধ্যমে অর্থনীতিতে সরাসরি তিন ধরনের সুবিধা রয়েছে।


প্রথমত, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন হবে। এতে ওই অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্য বিস্তার লাভ করবে। বিনিয়োগ বাড়বে। দ্বিতীয়ত, কৃষক সরাসরি উপকৃত হবেন। তাদের উৎপাদিত পচনশীল পণ্য সরাসরি ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য স্থানে পাঠাতে পারবেন। এতে পণ্যের ভালো দাম পাওয়া যাবে। তৃতীয়ত, এ সেতুর ফলে সামগ্রিকভাবে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের বিস্তার হবে। বিশেষ করে ভারতের বাণিজ্য বাড়াতে মোংলা বন্দর ব্যবহার করা যাবে।


Read also: দা ফ্লাইং ডাচম্যান নামক ভূতুড়ে জাহাজ


পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ২০১০ সালে বিশ্বব্যাংক নিজেরা তদন্ত শুরু করে এবং তাদের তথ্যের ভিত্তিতেই তারা কানাডা পুলিশকে সে দেশের এসএনসি-লাভালিনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করে। পাঁচ বছরের বেশি সময়ের বিচার প্রক্রিয়া শেষে কানাডার আদালত ২০১৭ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি সেই দুর্নীতির মামলা খারিজ করে দেয়। আদালত রায়ে বলেন, এ মামলায় যেসব তথ্য দেওয়া হয়েছে, সেটা অনুমানভিত্তিক এবং গুজব।  ২০১৪ সালের নভেম্বরে শুরু হয় মূল সেতুর কাজ। ২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী মূল সেতুর নির্মাণকাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।


মূল সেতু নির্মাণ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি)। নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন।


২০০৭ সালে একনেক ১০ হাজার ১৬১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পটি অনুমোদন করেছিল। পরে নকশা পরিবর্তন হয়ে দৈর্ঘ্য বেড়ে যাওয়ায় নির্মাণ ব্যয়ও বেড়ে যায়। ২০১১ সালে ২০ হাজার ৫০৭ কোটি ২০ লাখ টাকার সংশোধিত প্রকল্প একনেকে অনুমোদন পায়। ২০১৬ সালে আবারও ৮ হাজার ২৮৬ কোটি টাকা বাড়ালে মোট ব্যয় দাঁড়ায় ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। মূল সেতু নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ১২ হাজার ১৩৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। বাকি টাকা যাচ্ছে নদীশাসন ও অন্যান্য আনুসঙ্গিক কাজে।


সূত্র:

jugantor.com

risingbd.com

wikipedia.org


সার্চ কি-ওয়ার্ড

পদ্মা সেতুর দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ কত কিলোমিটার,পদ্মা সেতু ভিডিও,পদ্মা সেতুর আজকের খবর,পদ্মা সেতু a to z,পদ্মা সেতুর বর্তমান অবস্থা 2022,পদ্মা সেতু কয়টি জেলাকে যুক্ত করেছে,পদ্মা সেতুর বর্তমান অবস্থা ২০২২,স্বপ্নের পদ্মা সেতু সম্পর্কে ১০টি বাক্য,পদ্মা সেতুর প্রকল্পের নাম কী,পদ্মা সেতুর বর্তমান অবস্থা ২০২১,পদ্মা সেতু বিসিএস,পদ্মা সেতুর নকশা,পদ্মা সেতুতে প্রধানমন্ত্রী,পদ্মা সেতু mcq

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন