![]() |
| The Flying Dutchman |
ফ্লাইং ডাচম্যান হলো একটি কিংবদন্তি ভৌতিক জাহাজ যা কোনদিন কোথাও নোঙ্গর করেনি এবং সমুদ্রযাত্রায় চিরতরে হারিয়ে গিয়েছে। ভুতূড়ে জাহাজ নিয়ে যত লোককাহিনী প্রচলিত আছে, তার মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত ফ্লাইং ডাচম্যান। এই লোককাহিনীটির উৎপত্তি মূলত ১৭-শতকের সামুদ্রিক লোকাঁচারবিদ্যা থেকে।
The Flying Dutchman "ফ্লাইং ডাচম্যান" হচ্ছে কিংবদন্তীতুল্য এক ভূতুড়ে জাহাজ। যেটা কখনো কোন বন্দরে নোঙ্গর ফেলে না, শুধু উত্তাল সমুদ্রেই তাকে দেখা যায়।
প্রাচীন নথিপত্রে এই জাহাজটিকে ১৮-শতকের শেষের দিকের জাহাজ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রচলিত রয়েছে, ১৯ ও বিংশ-শতকের দিকে সমুদ্রের মাঝে জাহাজটিতে ভূতুরে আলো দেখা যেত। ফ্লাইং ডাচম্যান যখন কোন জাহাজকে অতিক্রম করত তখন এর ক্রুরা বহুদূরের প্রেতাত্মা বা অশুভ শক্তিকে বার্তা পাঠাত। সামুদ্রিক কিংবদন্তি অনুসারে, অভিশপ্ত জাহাজটি ঝড়ের কবলে পরে সমুদ্রে হারিয়ে গিয়েছিল।
যে ব্যক্তি এই জাহাজ ‘ফ্লাইং ডাচম্যান”কে দেখেছে, বলা হয় সেই মুখোমুখি হয়েছে ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞের। ‘ফ্লাইং ডাচম্যান” জাহাজ সংক্রান্ত ঘটনার উৎপত্তি সম্পর্কে বিভিন্নজনের বিভিন্ন মত রয়েছে। কেউ বলে এগুলো সামুদ্রিক লোকগাঁথা। আবার অন্যরা বলেন, প্রতিটি লোকগাঁথার উৎসে কিছু সত্য ঘটনা থাকে। তাই ‘ফ্লাইং ডাচম্যান’ জাহাজ সংক্রান্ত ঘটনাগুলো হেসে উড়িয়ে দেয়ার কোন কারণ নেই। রহস্যময় এ জাহাজ নিয়ে প্রচলিত কাহিনীগুলো প্রথম শোনা যায় সপ্তদশ আর অষ্টাদশ শতকে। এরপর উনবিংশ আর বিংশ শতাব্দীতে এসেও অনেকেই গভীর সমুদ্রে এই ভূতুড়ে জাহাজ দেখতে পাবার কথা জানান। অন্য জাহাজের যাত্রীরা হাত নাড়লে, ফ্লাইং ডাচম্যানের যাত্রীরা নাকি তাদেরকে মৃত্যু সংক্রান্ত বার্তা পাঠানোর চেষ্টা করে!
শোনা যায়, জাহাজটি উত্তমাশা অন্তরীপের কাছাকাছি প্রচণ্ড ঝড়ের কবলে পড়ে। জাহাজের নাবিকেরা জাহাজটি নোঙর করাতে অনুরোধ করলেও ক্যাপ্টেন তাদের কথা শোনেননি।
ক্যাপ্টেন ভেবেছিলেন, যতকিছুই হোক তার জাহাজ ঝড়ে টিকে থাকবে। তিনি না থেমে অন্তরীপ পার হতে চেয়েছিলেন। দম্ভের চোটে তিনি ঘোষণা করেছিলেন শেষ বিচারের দিন পর্যন্ত হলেও তিনি জাহাজ চালিয়ে যাবেন, তারপরও অসফল হবেন না।
তার এ দম্ভবাক্য শুনে শয়তান তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়। শয়তান অভিশাপ দেয় মহাসমুদ্রে চিরকালের মতো ভাসতে থাকবে এ জাহাজ। সেই থেকে অহল্যার মতো অভিশাপে অনাদিকালের জন্য আটকে যায় দ্য ফ্লাইং ডাচম্যান।
এরপর থেকেই মহাসমুদ্রে একা বিচরণ করছে ফ্লাইং ডাচম্যান। কথিত আছে মাঝেমধ্যে সমুদ্রে এ জাহাজকে আচমকা দেখতে পান নাবিকেরা। জাহাজটি নাকি মৃত্যু বা দুর্ঘটনার পূর্বাভাস দিতে হঠাৎ করে দেখা দেয়।
ইতিহাসে আরো অনেক ভূতুড়ে জাহাজের উল্লেখ আছে, কিন্তু ফ্লাইং ডাচম্যান জাহাজ নিয়ে প্রচলিত ঘটনাগুলো আজো সবচেয়ে রহস্যময় ও ভয়াবহ । অন্য জাহাজের যাত্রীরা হাত নাড়লে, ফ্লাইং ডাচম্যানের যাত্রীরা নাকি তাদেরকে মৃত্যু সংক্রান্ত বার্তা পাঠানোর চেষ্টা করে!
ফ্লাইং ডাচম্যানকে দেখে যে জাহাজগুলো ডুবে গিয়েছে, তাদের কাছে ফ্লাইং ডাচম্যানের কাছ থেকে চিঠি বা সংবাদ লিখিত পত্র পাঠানো হয়েছিল। হতভাগ্য জাহাজগুলোর ক্রুরা যখনই এই চিঠি বা সংবাদ বহনকারী কাগজ খুলে পড়া শুরু করতো, তখনই জাহাজগুলো ভয়াবহ ঝড়ের কবলে পড়ে ডুবে যেত আর সলিল সমাধি হত এগুলোর নাবিকদের।
শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে সাড়া বিশ্বে নাবিকদের মাঝে এই অভিশপ্ত ও ভৌতিক জাহাজটির কাহিনী প্রচলিত রয়েছে। অনেক নাবিক মনে করেন, জাহাজটি ও তার ক্রুরা সকলেই অভিশপ্ত এবং ঈশ্বরের অভিশাপের কারণেই তারা কোনদিন নোঙ্গর করতে পারেননি। কাহিনী অনুসারে, ফ্লাইং ডাচম্যান সমুদ্রে উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘুরে বেড়ায় এবং এটি যেমন সমুদ্রে হঠাৎ করেই অবির্ভাব হয় তেমনি হঠাৎ করেই উধাও হয়ে যায়।
সেই ১৬০০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত বহু মানুষ বহুবার ফ্লাইং ডাচম্যানকে কেপ অব গুড হোপের সমুদ্রের বুকে ভেসে বেড়াতে দেখেছে। আর এগুলোর সবগুলোই দেখা গিয়েছে যখন আবহাওয়া প্রচণ্ড খারাপ ও সমুদ্র উত্তাল ছিল। সবশেষ, ১৯৪০ সালে এই ভূতুড়ে জাহাজ ফ্লাইং ডাচম্যানকে দেখা গিয়েছিল। যারা দেখেছেন তারা খুব নিখুঁতভাবে জাহাজটির বর্ণনা দেন। অথচ তাদের কারোরই ১৬শ শতকের জাহাজের নকশার ব্যপারে তেমন কোন ধারণাই ছিল না। যদিও অনেকের মতে, উত্তাল সমুদ্রের মাঝে দৃষ্টিবিভ্রাটের কারণে এই ভূতুড়ে জাহাজ ‘ফ্লাইং ডাচম্যান” দেখা যাবার ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু তারা খুব জোর গলায় এর বিরোধিতাও করতে পারছে না। আসলেই কি ‘দ্য ফ্লাইং ডাচম্যান” ব্যাখ্যার অতীত কোন ঘটনা?
সূত্র
wikipedia.org
roar.media
priyo.com
aparajeobangla.com
সার্চ কি-ওয়ার্ড
দ্য ফ্লাইং ডাচম্যান,ফ্লাইং ডাচম্যান: রূপকথা নাকি সত্যি,'দ্য ফ্লাইং ডাচম্যান'- মৃত্যুর বার্তা বহনকারী রহস্যময় এক জাহাজ,ফ্লাইং ডাচম্যান: যে ভুতুড়ে জাহাজ এখনো সমুদ্রে ঘুরে বেড়াচ্ছে,দ্য ফ্লাইং ডাচম্যানঃ সমুদ্রের বুকে এক অভিশপ্ত নাম,দা ফ্লাইং ডাচম্যান নামে ভূতুড়ে জাহাজের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা!
