![]() |
| চাঁদের চারা গাছ |
প্রথমবারের মতো চাঁদের মাটিতে গাছ জন্মাতে সক্ষম হয়েছেন বিজ্ঞানীরা। ১৯৭২ সালে শেষবার চাঁদের মাটিতে মানুষ পা রাখার পর ২০২৫ সালে আবার চাঁদে মানুষ পাঠানোর পরিকল্পনা
করছে নাসা।
বিজ্ঞানীরা প্রথমবারের মতো চাঁদের মাটিতে গাছ জন্মাতে সক্ষম হয়েছেন। এই অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের একদল গবেষক। চাঁদে
মানবজাতির দীর্ঘমেয়াদী বসবাসের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। হয়তো একদিন চাঁদের বুকে ফসল ফলানো সম্ভব হবে এটা তারই লক্ষণ। চাঁদের মাটিতে বীজ রোপণ করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক। তাদের মধ্যে একজন হলেন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অফ ফুড এন্ড এগ্রিকালচার সায়েন্সের অধ্যাপক রব প্যারোল। তিনি বলেন আগামী দিনগুলোতে মহাকাশে বড় পরিসরে অভিযান চালাবে মানুষ। এসময় চাঁদকে মহাকাশযান উৎক্ষেপণ কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হতে পারে, ফলে অক্সিজেন ও খাদ্যের চাহিদা মেটাতে যেখানে গাছপালা লাগানোর প্রয়োজন পড়তে পারে।
এ ধরনের চিন্তা ভাবনা থেকেই চাঁদের মাটিতে গাছ জন্মানোর পরিকল্পনাটি তাদের মাথায় আসে। এরপর সেই পরিকল্পনা বাস্তবে রূপ দেয়ার জন্য কাজে নেমে পড়েন তারা। তারা মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার কাছে সংরক্ষিত থাকা চাঁদে মাটি পেতে আবেদন করেন। গত শতকে অ্যাপেলের ১১, ১২, ১৭ অভিযানের সময় চাঁদ থেকে ওই মাটি সংগ্রহ করা হয়েছিল। আবেদন করার বেশ কয়েক বছর পরে সংস্থাটি তাদেরকে মাটি দিতে রাজি হয়। তবে মাত্র ১২ গ্রাম চাঁদের মাটি দেওয়া হয় তাদের। অল্প এই মাটি নিয়ে কাজে লেগে পড়েন গবেষকরা।
তারা সেই মাটিতে পানি আর বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান মেশান। তারপরে ১ গ্রাম মাটির প্রতিটি কন্টেইনারে হেলপ্লেস নামের একটি গাছের বীজ রোপন করেন। পাশাপাশি তারা আগ্নেয়গিরির
ছাই এও কিছু বীজ লাগান। এত প্রচেষ্টার পর ও চাঁদের মাটিতে গাছ হবে কি না তা নিয়ে ভীষণ রকম আশঙ্কায় ছিলেন গবেষকরা। তবে এসব আশঙ্কা মিথ্যা প্রমাণ করে প্রায় সবকটি বীজ থেকে চারা গাছ বের হয়ে আসে। ৪৮ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে চাঁদের মাটি ও আগ্নেয়গিরির ছাই এ লাগানো বীজ থেকে থেকে চারা গাছ জন্মেছে। গবেষক অ্যানালিসা পল বলেন, আমরা অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। এমনটি হবে তা ভাবি নি। এর অর্থ চাঁদের মাটি গাছের জন্ম নিতে বাধা দেয় না। কিছুদিন পর দেখা গেল যে, ছাই এর ভেতরে জন্মানো চারা গাছের চেয়ে চাঁদের মাটিতে জন্মানো চারা গাছের বৃদ্ধি কিছুটা কম। তবে পৃথিবী থেকে নিয়ে যাওয়া গাছ চাঁদের পরিবেশে কেমন প্রতিক্রিয়া দেখাবে সে বিষয়ে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত নয়। যদি ফসল ফলানো সম্ভব হয় তাহলে সেখানে মিশনে যাওয়া নভোচারীরা নিজেদের খাবার নিজেরাই ফলাতে পারবেন। এছাড়া
চাঁদের বাতাস বিশুদ্ধ করতে ও বায়ুমণ্ডল থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড সরাতে এটি নভোচারীদের সহায়তা করবে। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার প্রধান বিল নেলসন বলেন, নাসার
দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য গুলোর উপর এই গবেষণার প্রভাব অত্যান্ত সুদূরপ্রসারী।
চাঁদ ও মঙ্গলের পাওয়া সম্পদ ব্যবহার করে মহাকাশে বসবাসকারী নভোচারীদের জন্য খাবারের উৎস তৈরি করতে এই গবেষণা সহায়তা করবে। তাছাড়া পৃথিবীর যেসব অঞ্চলে প্রয়োজনের তুলনায় খাদ্য কম আছে সেসব স্থানে প্রতিকূল পরিবেশে চাষাবাদের নতুন উপায় খুঁজে বের করতেও নাসাকে সহায়তা করবে এই গবেষণা। এবছরেই আর্টেমিস কর্মসূচির আওতায় চাঁদে একটি মিশন পাঠাতে যাচ্ছে নাসা ও ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা। কিন্তু সেখানে কোন নভোচারী থাকছেন না। ১৯৭২ সালে শেষবার চাঁদের মাটিতে মানুষ পা রাখার পর ২০২৫ সালে আবার চাঁদে মানুষ পাঠানোর পরিকল্পনা
করছে নাসা।
Keywords: চাঁদের মাটিতে গাছ, চাঁদের মাটিতে জন্মেছে গাছ, চাঁদের বুকে ফসল ফলানো, চাঁদের মাটিতে মানুষ, চাঁদে মানুষ, চাঁদের মাটিতে জন্মানো চারা
