![]() |
| আইসল্যান্ড |
আইসল্যান্ড পৃথিবীর একমাত্র দেশ যে দেশে গ্রীষ্মকালে মুসলিমদের প্রায় ২২ ঘন্টা রোজা রাখতে হয়। আইসল্যান্ডে গ্রীষ্মকালে দিনের আলো থাকে প্রায় ২২ ঘণ্টা, তাই সেখানকার মুসলিমদের প্রায় ২২ ঘন্টা রোজা রাখতে হয়।
পবিত্র রমজান মাসে সমগ্র বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত রোজা পালন করেন। রোজার প্রধান কাজ হল সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার থেকে বিরত থাকা। ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে সারা বিশ্বের দিন-রাতের হিসেব যেমন এক নয় ঠিক তেমনি ভাবে রমজানের রোজা পালনের সময় পার্থক্য রয়েছে।
Read also: রমজানে যেসব খাদ্য খাবেন এবং যেসব খাদ্য পরিহার করবেন..
বেশ কিছু দেশে দিনের দৈর্ঘ্য অনেক লম্বা হয় তাই সেখানকার রোজা হয় অনেক দীর্ঘ উত্তর গোলার্ধের দেশগুলোতে প্রায় ১৮ থেকে ২২ ঘণ্টা পর্যন্ত রোজা রাখতে হয়। আইসল্যান্ডে গ্রীষ্মকালে দিনের আলো থাকে প্রায় ২২ ঘণ্টা সে কারণে আইসল্যান্ডিক দের এত দীর্ঘ সময় রোজা রাখতে হয় সমগ্র আইসল্যান্ডেই মাত্র দেড় হাজারেরও কম মুসলিম বসবাস করেন এদের বেশিরভাগই থাকেন আইসল্যান্ডের রাজধানী রেইকিয়াভিকে। তারা তারাবির নামাজ এবং সেহরির জন্য মাত্র ২ ঘন্টা সময় পান ওখানকার মুসলিমরা। এবং পরের দিন রাত বারোটায় ইফতার করেন। এতো অল্প সময়ের মধ্যে ইফতার, মাগরিবের নামাজ, তারাবি এবং সেহরি করার জন্য পর্যাপ্ত সময় থাকে না বাসা থেকে ইফতার খেয়ে মসজিদে আসতে আসতে সেহেরির সময় শেষ হয়ে যায় । তাই এখানকার মুসলিমরা একসাথে মসজিদে ইফতার করেন এরপর মাগরিব এশা ও তারাবির নামাজ আদায় করে মসজিদে সেহরী খেয়ে সবাই বাড়ি ফেরেন এখানকার অধিকাংশ অধিবাসী যারা বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চল থেকে এখানে এসেছেন কেউ কেউ বলছেন তাদের নিজেদের দেশের তুলনায় অনেক বেশি দীর্ঘ সময় রোজা এখানে রাখতে হয়। তবে এখানে সূর্যের তাপ কম হওয়ার কারণে মধ্যপ্রাচ্য এশিয়ার দেশগুলোর মতো রোজা রেখে গরমে পরতে হয় না। তবে ২২ ঘন্টা রোজা থাকাটাও সহজ কাজ নয়। তাই স্থানীয় বাসিন্দারা অনেকেই দিনের বেশ খানিকটা সময় ঘুমিয়ে কাটান। সক্ষম মানুষরা দীর্ঘ রোজা পালন করলেও বৃদ্ধ অসুস্থ এবং গর্ভবতী নারীরা রোজা রাখতে পারেন না।
Read also: নিজ দেশের জন্য সাহায্য চাইলেন সেই শ্রীলঙ্কান গায়িকা ইউহানি..
গ্রীষ্মকালে রমজান মাসে উত্তর গোলার্ধের মুসলিমদের কেন এতো দীর্ঘ সময় ধরে রোজা রাখতে হয়?
কারণ হলো উত্তর মেরু অঞ্চলে গ্রীষ্মকালে সূর্য কখনো অস্ত যায় না। প্রকৃতির এই আচরণকে বলা হয় সামারসলিস্টিস। সামারসলিস্টিসে মেরু অঞ্চল সূর্যের দিকে কাত হয়ে যায়। বছরে দুইবার সামারসলিস্টিস হয়। একবার উত্তর গোলার্ধে আরেকবার দক্ষিণ গোলার্ধে। দক্ষিণ মেরুর কাছে যেহেতু তেমন মানব বসতি নেই, তাই সেখানে খুব একটা সমস্যা হয় না। কিন্তু উত্তর মেরুর আশেপাশের দেশগুলোতে গ্রীষ্মকালের রমজানের রোজা অনেক দীর্ঘ হয়। আর্টিক অঞ্চলে গ্রীষ্মকালে সূর্য অস্ত যায় না। এ সময় মাত্র ২ ঘন্টার জন্য সূর্য দিগন্তরেখার আড়ালে চলে যায় ।তাই এই অঞ্চলের দেশগুলোতে রোজার সময় অনেক দীর্ঘ হয়। উত্তর গোলার্ধের দেশ আইসল্যান্ড, নরওয়ে, গ্রীনল্যান্ড, আলাস্কা এবং কানাডার কিছু অংশে প্রায় ২০ ঘণ্টার বেশি রোজা রাখতে হয়। এছাড়া ইউরোপের দেশ সুইডেন, ডেনমার্ক এবং যুক্তরাজ্যের মুসলিমরা প্রায় ১৮, ১৯, ২০ ঘন্টা রোজা পালন করেন। রমজান যখন আবার শীতকালে আসা শুরু হবে তখন ইউরোপের দেশগুলো মাত্র ছয়, সাত, আট ঘণ্টার রোজা রাখেন এবং উত্তর গোলার্ধের দেশগুলোর জন্য তখন রোজা হবে মাত্র দুই ঘণ্টার কম। দীর্ঘ সময় রোজা রাখার বিষয়ে বৃটেনের বিতর্কিত ইসলামী চিন্তাবিদ ড. উসামা হাসান ফতোয়া দিয়েছেন যে, যারা উত্তর গোলার্ধে বসবাস করেন তারা প্রয়োজনীয় পরিস্থিতি বুঝে ১২, ১৪ বা ১৬ ঘন্টা রোজা রাখতে পারেন। তবে এই ফতোয়ার সাথে অনেক আলেম দ্বিমত পোষণ করেন। তাদের মতে স্থানীয় সময় অনুযায়ী রোজা রাখা উচিত যদি দীর্ঘদিনের সময় কে কমিয়ে এনে রোজা রাখা হয় তবে তাতে রোজা নাও হতে পারে।
Keywords:
কোন দেশে কত ঘন্টা রোজা, সবচেয়ে বেশী সময় রোজা কোন দেশে, রমজান মাস,
