![]() |
| শ্রীমুখ গ্রাম |
বিশ্বের সবচেয়ে ছোট গ্রামের অবস্থান আমাদের বাংলাদেশে। সম্প্রতি এমন একটি ক্ষুদ্র গ্রামের সন্ধান মিলেছে বাংলাদেশের সিলেটে। দূর থেকে দেখলে ভাববেন ছোট একটা টিলা, কিন্তু সরকারি সকল কাগজপত্রে, এই টিলার মতো ছোট্ট জায়গাটিকে পরিপূর্ণ গ্রামের স্বীকৃতি দিচ্ছে। গিনেজ বুক অফ ওয়ার্ল্ড এর স্বীকৃতি পেতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন স্থানীয় প্রশাসন। মাত্র ৫ জন বাসিন্দা নিয়ে বাংলাদেশের বুকে গড়ে ওঠা শ্রীমুখ নামে বিশ্বের সবচেয়ে ছোট গ্রাম।
বলুনতো বিশ্বের সবচেয়ে ছোট গ্রামের অবস্থান কোথায়? আমি বলছি বিশ্বের সবচেয়ে ছোট গ্রামের অবস্থান আমাদের বাংলাদেশে, শুনে অবাক হলেন তো, সত্যিই বলছি!
সম্প্রতি এমন একটি ক্ষুদ্র গ্রামের সন্ধান মিলেছে বাংলাদেশের সিলেটে। দূর থেকে দেখলে ভাববেন ছোট একটা টিলা, কিন্তু সরকারি সকল কাগজপত্রে, এই টিলার মতো ছোট্ট জায়গাটিকে পরিপূর্ণ গ্রামের স্বীকৃতি দিচ্ছে। গিনেজ বুক অফ ওয়ার্ল্ড এর স্বীকৃতি পেতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন স্থানীয় প্রশাসন। চলুন ঘুরে আসা যাক মাত্র ৫ জন বাসিন্দা নিয়ে বাংলাদেশের বুকে গড়ে ওঠা এই বিশ্বের সবচেয়ে ছোট গ্রামটি থেকে।
গ্রামটির অবস্থান সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার তেলিকোনা ও পশ্চিম নোয়াগাঁও নামের দুই গ্রামের মাঝখানে। মাত্র ৬০ শতক জায়গায় অবস্থিত এই গ্রামটি। পাঁচজনের গ্রামটিতে ১ জন পুরুষ ৩ জন নারী এবং এক শিশু বসবাস। ইউনিয়ন পরিষদের তথ্য অনুযায়ী ভোটার সংখ্যা মাত্র তিনজন। অনেকের দাবি এটি এশিয়ার সবচেয়ে ছোট গ্রাম, খুঁজলে বিশ্বের কোথাও এত ছোট গ্রাম আর মিলবে না।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের একজন অধ্যাপক বলেন, দাগ খতিয়ান এবং মৌজার সকল কিছুতেই এটি শ্রীমুখ গ্রাম হিসেবে লিপিবদ্ধ রয়েছে। এবং এই গ্রামের সদস্য সংখ্যা মাত্র পাঁচজন, তাই ধরেই নেওয়া যায় এটি বিশ্বের সবচেয়ে ছোট গ্রাম। কারণ ইতোমধ্যে বিশ্বের সবচেয়ে ছোট গ্রাম যেটি সেটি হচ্ছে "ক্রোয়েশিয়ার হাম" নামের একটি গ্রাম। সেটিতে জনসংখ্যা ৩০ জন, এবং আকারে শ্রীমুখ গ্রামের থেকে অনেক বড়। সে হিসেবে বিশ্ব স্বীকৃতির জন্য শ্রীমুখ গ্রাম নিয়ে সরকারের কাজ করা উচিত।
বর্ষায় চারপাশে পানিতে টইটুম্বুর আর শুষ্ক মৌসুমে ধানি জমি কিংবা জমির মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকা গাছগুলো যেন এই গ্রামের ঐতিহ্যের সাক্ষী। গ্রামটি অবহেলিত হলেও পর্যটকদের নজর কাড়ার মতো। ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায় দেশভাগের আগে, এক সময় শ্রীমুখ গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের বসবাস ছিল। কালের বিবর্তনে গ্রামটির ছোট হতে থাকে, টিকে থাকে এক টুকরো ভূমি আর একটি মাত্র পরিবার।
স্থানীয় পার্শ্ববর্তী এলাকা বাসিন্দাদের মতে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯৬৪ সালে, শ্রীমুখ গ্রামে একটি হিন্দু পরিবার বসবাস করত। বসবাস করা হিন্দু পরিবারটি অন্যত্র চলে যাওয়ার সময়, বর্তমান বাসিন্দা আফতাব আলীর আপন মামা, প্রতিবেশী পশ্চিম নওগাঁও গ্রামের মরহুম হাবিবুল্লার কাছে শ্রীমুখ গ্রামের বাড়িটি বিক্রি করে অন্যত্র চলে যান। তিনি মারা যাওয়ার আগেই বর্তমান বাসিন্দা আফতাবের মা মরহুমা কটাই বিবি কে দান করে দেন বাড়িটি। তখন থেকে বাস করছে ওই বাড়িটিতে আফতাব পরিবারের লোকজন।
পরিবারের একমাত্র কর্তা আফতাব আলী বর্তমানে প্রবাসে আছেন। তার স্ত্রী রাহিমা বেগম জানালেন দুর্ভোগের কথা। গ্রামটিতে আসা-যাওয়ার জন্য নিজস্ব বা নির্দিষ্ট কোনো রাস্তা নেই। তাই প্রতিবেশী গ্রামের অন্যের জমির আল দিয়েই আসা যাওয়া করতে হয়। এমনকি সুপ্রিয় পানির সংকটো রয়েছে এগ্রামে। বর্ষায় চলতে হয় নৌকায়।
শ্রীমুখ গ্রামে যেতে হলে সিলেট থেকে বিশ্বনাথ উপজেলা সদর থেকে ২০ মিনিটের রাস্তার মধ্যখানে রামপাশা বাংলার রাখাল রাজা হাছন রাজার বাড়ি।
শ্রীমুখ গ্রামকে বিশ্বের বুকে কিভাবে একটি স্বীকৃতি দেওয়া যায় তা নিয়ে পরিকল্পনা চলছে। আপাতত বিশ্বস্বীকৃতি, রাস্তা, গ্রামের সৌন্দর্য, পানি এবং স্বাস্থ্য এ বিষয়গুলি নিয়ে কাজ চলছে।
