আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে Join করুন! এখানে আপনি বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও রহস্য বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য জানতে পারবেন। Join Now

নোটিশ

এসো, যদি জানতে চাও!

কৃত্রিম সূর্য তৈরি করে তাক লাগিয়ে দিয়েছে চীন | China has made artificial sun | Mayabee Jagat

গবেষণাগারে কৃত্রিম সূর্য তৈরি করে তাক লাগিয়ে দিয়েছে চীন। সেই সূর্য আবার টেক্কা দিচ্ছে আসল সূর্যকে।

গবেষণাগারে কৃত্রিম সূর্য তৈরি করে তাক লাগিয়ে দিয়েছে চীন। সেই সূর্য আবার টেক্কা দিচ্ছে আসল সূর্যকে। অবিশ্বাস্য শোনালেও চীনের একদল বিজ্ঞানী এমন সূর্য তৈরি করেছে যা তাপমাত্রা আসল সূর্যের চেয়েও ৮ গুণ বেশি। পৃথিবীর বুকে অবস্থানকারী এই সূর্য, তাপমাত্রার দিক দিয়ে টপকে গেছে আসল সূর্যকে।


চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় সিচুয়ান প্রদেশের সফলভাবে চালু করা হয়েছে "hl2 tokamak" পারমাণবিক চুল্লি। এই চুল্লিটি  চীনের বৃহত্তম এবং সবচেয়ে উন্নত পারমাণবিক ফিউশন পরীক্ষামূলক গবেষণা যন্ত্র। চুল্লিতে উৎপাদিত বিপুল পরিমাণে তাপ শক্তির কারণে একটিকে কৃত্রিম সূর্য বলা হচ্ছে। বলা হয় এই চুল্লি থেকে ১৫০ মিলিয়ন ডিগ্রী সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রা তৈরি হতে পারে। ১০ হাজারের বেশি চিনা এবং বিদেশি বিজ্ঞানীদের কাজের সম্মিলিত ফল এই কৃত্রিম সূর্য।


এই‌ সূর্যের তাপমাত্রা ১২ কোটি ডিগ্রি সেলসিয়াস যা সূর্যের কেন্দ্রের তাপমাত্রা থেকে 8 গুণ বেশি। তবে বর্তমানে সেটা কেবল মাত্র একশ এক সেকেন্ডের জন্য। অল্প সময়ের জন্য হলেও এই সাফল্য সারাবিশ্বের বিজ্ঞানীদের চমকে দিয়েছে।


চীন 2006 সাল থেকে পারমাণবিক ফিউশন চুল্লির ছোট্ট সংস্করণ তৈরীর কাজ চালিয়ে আসছিল। সেটি তারা পূর্ণ আকারে চালু করেছে।


South China morning post পোস্ট এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, গবেষকরা এই কৃত্রিম সূর্য সাত কোটি ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপে ১৭ মিনিট ৩৬ সেকেন্ড পর্যন্ত পরিচালনা করছেন। অথচ মূল সূর্যর‌ কেন্দ্র দেড় কোটি ডিগ্রি সেলসিয়াসের মত উত্তপ্ত হতে পারে।


কিন্তু বিজ্ঞানীরা কেন এত বেশি তাপ উৎপন্ন করতে চাইছে। আসলে এই প্রকল্পের প্রধান লক্ষ্য বলা হচ্ছে নিরবিচ্ছিন্ন শক্তি প্রবাহ তৈরি করা। এবং মানুষের ক্রমবর্ধমান জ্বালানির চাহিদার পরিবেশবান্ধব উৎস তৈরি করা।


সমুদ্রের ১ লিটার পানি থেকে যে পরিমাণ ডিউটেরিয়াম গ্যাস পাওয়া যায় তা থেকে নিউক্লিয়ার ফিউশন এর মাধ্যমে পাওয়া শক্তি ৩০০ লিটার গ্যাসোলিন কুড়িয়ে পাওয়া শক্তির প্রায় সমান। সমুদ্র থেকে পাওয়া ডিউটেরিয়ামের সাহায্যে সূর্যের মতোই নিউক্লিয়ার ফিউশন ঘটিয়ে সেই তাপ প্রবাহ তৈরি করতে চাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।


চীনের বৃহত্তম ও আধুনিক এই নিউক্লিয়ার ফিউশনকে দূষণ হিন শক্তিশালী উৎস হিসেবে উন্মুক্ত করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন দেশটির বিজ্ঞানীরা। আর এটি করা গেলে শুধুমাত্র পারমাণবিক ফিউশন শক্তির বিকাশ ঘটবে তা নয়, এটি ভবিষ্যতের জ্বালানি এবং জাতীয় অর্থনীতির টেকসই উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে


তবে গবেষণার এই নিউক্লিয়ার ফিউশনের প্রক্রিয়া টি চালিয়ে যাওয়া কঠিন এবং ব্যয়বহুল। এমন বিক্রিয়ায় জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয় হাইড্রোজেন এবং ডিউটেরিয়াম গ্যাস। এ প্রকল্পে চীন এরমধ্যে ৭০ কোটি ১০ লাখ ব্রিটিশ পাউন্ড খরচ করেছে বলে জানিয়েছেন ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড the sun. এদিকে দক্ষিণ কোরিয়া ও এমন প্রযুক্তির পরীক্ষা চালাচ্ছে। ২০২০ সালে দেশটি ২০ সেকেন্ডের জন্য ১০ কোটি তাপমাত্রা উৎপন্ন করতে সক্ষম হয়েছিলো।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন