আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে Join করুন! এখানে আপনি বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও রহস্য বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য জানতে পারবেন। Join Now

নোটিশ

এসো, যদি জানতে চাও!

ডাইনোসর | Dinosaurs - mayabee jagat

ডাইনোসর বলতে জনপ্রিয় ধারণায় একটি অধুনা অবলুপ্ত, সাধারণত বৃহদাকার মেরুদণ্ডী প্রাণীগোষ্ঠীকে বোঝায়।
ডাইনোসর | Dinosaurs
ডাইনোসর | Dinosaurs

ডাইনোসর বলতে জনপ্রিয় ধারণায় একটি অধুনা অবলুপ্ত, সাধারণত বৃহদাকার মেরুদণ্ডী প্রাণীগোষ্ঠীকে বোঝায়। এরা পৃথিবীর বাস্তুতন্ত্রের প্রাগৈতিহাসিক অধিবাসী এবং বৈজ্ঞানিকদের অনুমান এই প্রভাবশালী প্রাণীরা প্রায় ১৬ কোটি বছর ধরে পৃথিবীতে রাজত্ব করেছে। প্রথম ডাইনোসরের বিবর্তন হয়েছিল আনুমানিক ২৩ কোটি বছর পূর্বে।

ডাইনোসর

ডাইনোসর হলো অ্যানিমেলিয়া জগতের কর্ডাটা পর্বের ভার্টিব্রাটা উপপর্বের সরোপসিডা শ্রেণির ডায়াপসিড উপশ্রেণির ডায়নোসরিয়া মহাবর্গের অধুনা অবলুপ্ত প্রাণী। এরা পৃথিবীর বাস্তুতন্ত্রের প্রাগৈতিহাসিক অধিবাসী। ডাইনোসর বলতে কোনো নির্দিষ্ট প্রাণীকে বোঝায় না, বরং একদল প্রাণী সমষ্টিকে বোঝায়।


১৮৪২ সালে পুরাজীববিদ স্যার রিচার্ড ওয়েন ডাইনোসরদের আনুষ্ঠানিকভাবে ডাইনোসরিয়া নামকরণ করেন। ডাইনোসরিয়া শব্দটি গ্রিক শব্দ থেকে আগত। দেইনাস ও সাইরোস এ দুটি শব্দের সম্বনয়ে ডাইনোসর শব্দটি সৃষ্টি হয়েছে। যেখানে দেইনাস অর্থ ভয়াবহ ও সাউরোস অর্থ গিরগিটি। ডাইনোসর শব্দের আক্ষরিক অর্থ গিরগিটি হলেও তারা সরীসৃপ শ্রেণীর অন্তর্গত একটা আলাদা গোষ্ঠীর প্রতিনিধি।


বিজ্ঞানীদের ধারণা আনুমানিক ২৩ কোটি বছর পূর্বে প্রথম ডাইনোসরের বিবর্তন হয়েছিল। প্রায় ১৬ কোটি বছর ধরে রাজত্ব করছিল এই দানবরা। প্রায় ৬.৫ কোটি বছর পূর্বে ক্রিটেশিয়াস যুগের শেষে বিধ্বংসী প্রকৃতিক বিপর্যয়ে ডাইনোসর পৃথিবী থেকে সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হয়ে যায়। ডায়নোসররা ছিল উষ্ণশোণিত ও দ্বিপদ গঠনে সক্ষম। যদিও বেশিরভাগ ডায়নোসরই দ্বিপদ; কিন্তু চতুষ্পদ ডায়নোসরের সন্ধান পাওয়া গেছে।


টাইরেনোসরাস

টাইরেনোসরাস
টাইরেনোসরাস

টাইরেনোসরাস সেই ডায়নোসর, যাদের লিজার্ডের রাজা (T Rex) বলা হয়। এরা দ্বিপদ, মাংসাশী, সুবৃহৎ মাথার খুলি লম্বা ও ভারী লেজযুক্ত প্রাণী। এদের সামনের পা খুব ছোট এবং পায়ে দুটো করে আঙ্গুল আছে; কিন্তু আকারের তুলনায় অস্বাভাবিক শক্তিধর। এরা ভয়ঙ্কর ডাইনোসরগুলোর মধ্যে একটি।


টাইরেনোসরাস গ্রিক টাইরেনোস ও সরাস এ দুটির সম্বনয়ে তৈরি। এরা কোয়েলুরোসরিয়ান থরোপড গণের ডাইনোসর। T-Rex বর্তমানের উত্তর আমেরিকার পশ্চিমাংশে তখনকার লারামিডিয় নামের দ্বীপে বাস করতো।


টাইরেনোসরাসের ভর: ৬০০০-১২০০০ কেজি

টাইরেনোসরাসের দৈর্ঘ্য: ৭.৯-৯ মিটার

টাইরেনোসরাসের উচ্চতা: ২.৯-৩ মিটার

টাইরেনোসরাসের গতি: ৩২ কি.মি./ঘণ্টা


ট্রাইসেরাটপস

ট্রাইসেরাটপস
ট্রাইসেরাটপস

ট্রাইসেরাটপস ডাইনোসরিয়া মহাবর্গের ট্রাইরাসোটোপসিনি জাতির অন্তর্ভুক্ত। এরা একপ্রকার শাখাহারি বড় মাথাযুক্ত ডাইনোসর। ট্রাইসেরাটপস শব্দটি গ্রিক শব্দ থেকে আগত যার অর্থ ত্রি-শিংযুক্ত মুখ। প্রায় ৬৮ মিলিয়ন বছর পূর্বে উত্তর আমেরিকাতে এরা বসবাস করতো। আরকিটিপাল সিরাটপস হিসেবে ট্রাইসেরাটপস অন্যতমম জনপ্রিয় ডাইনোসর।


ট্রাইসেরাটপসের ভর: ৪৫০০-১৪০০০ কেজি

ট্রাইসেরাটপসের উচ্চতা: ৩. ৭-৬.১ মিটার

ট্রাইসেরাটপসের গতি: ২৭ কি.মি./ঘণ্টা


সরোফাগানাক্স

সরোফাগানাক্স
সরোফাগানাক্স

সরোফাগানাক্স ডায়নোসরিয়া মহাবর্গের অ্যালোসৌরিদায়ে পরিবারের সরোফাগানাক্স মহাজাতির অন্তর্ভুক্ত; মাংসাশী পরিজীবী ডাইনোসর। সরোফাগানাক্স গ্রিক শব্দ সওরোস ও ফাগেইন এ দু'টি শব্দ থেকে আগত। যেখানে সওরোস অর্থ টিকটিকি আর ফাগেইন অর্থ খেতে। সরোফাগানাক্স অর্থ টিকটিকি খাওয়া। সরোফাগানাক্স বর্তমান নিউমেক্সিকো ও যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করতো।


সরোফাগানাক্সের ভর: ৩০০০-৪৫০০ কেজি

সরোফাগানাক্সের দৈর্ঘ্য: ১০.৫-১৩ মিটার


স্পিনোসরাস

স্পিনোসরাস
স্পিনোসরাস

স্পিনোসরাস প্রথম সাঁতারু ডাইনোসর হিসেবে পরিচিত। স্পিনোসরাস ডায়নোসরিয়া মহাবর্গের স্পিনোসৌরিদায়ে পরিবারের স্পিনোসৌরিনি জাতির অর্ন্তভুক্ত সবচেয়ে বৃহত্তম মাংসাশী ডাইনোসর।


স্পিনোসরাস গ্রিক শব্দ থেকে আগত; যার আক্ষরিক অর্থ মেরুদন্ডীয় টিকটিকি। স্পিনোসরাসের প্রধান খাদ্য মাছ হলেও এটি জলে, স্থলে উভয় জায়গায় শিকার করতো। এদের খুলিটি আধুনিক কুমিরের মতোই দীর্ঘ, নিম্ন ও সরু ছিল এবং সরল শঙ্কযুক্ত দাঁত ও তিন আঙ্গুল যুক্ত বড় হাত ছিল।


স্পিনোসরসের ভর: ৬৪০০-৭৫০০ কেজি

স্পিনোসরসের দৈর্ঘ্য: ১২.৬-১৮ মিটার

স্পিনোসরসের উচ্চতা: ৪.৩- ৭ মিটার


মাইক্রোরেপ্টর

মাইক্রোরেপ্টর
মাইক্রোরেপ্টর

মাইক্রোরেপ্টর ডায়নোসরিয়া মহাবর্গের ড্রোমাইসৌরিডে পরিবারের মাইক্রোপর্টর মহাজাতির অন্তর্ভুক্ত চারপাখাযুক্ত মাংসাশী ডাইনোসর। এরা উড়তে সক্ষম এবং স্থলজ ও জলজ উভয় স্থানেই শিকার করতো।


মাইক্রোরেপ্টর গ্রীক শব্দ ম্যাক্রোস ও লাতিন শব্দ রেপ্টর থেকে আগত। এরা চীনে ১২০ মিলিয়ন বছর পূর্বে গাছে বসবাস করতো।


মাইক্রোরেপ্টরের দৈর্ঘ্য: ৪২-১২০ সে.মি.

মাইক্রোরেপ্টরের হাতের দৈর্ঘ্য: প্রায় ১ মিটার


ডাইনোসর কি বিলুপ্ত?

ডাইনোসর কি বিলুপ্ত? প্রশ্নটির উত্তর হ্যাঁ ও না দুটোই। বিজ্ঞানীরা এখনো এ সিদ্ধান্তে আসতে পারে নি, ডাইনোসর বিলুপ্ত কিনা। তাঁরা জীবজগতের এক শ্রেণীকে ডাইনোসর হিসেবে চিহ্নিত করেছেন; তা হলো পাখি। বর্তমানে পাখিদেরকে থেরোপড ডাইনোসরদের একমাত্র জীবিত বংশধর রূপে গণ্য করা হয়। তাই পাখিরা ডাইনোসর; সেই সূত্রেই ডাইনোসররা বিলুপ্ত নয়, জীবিত। কিন্তু সাধারণের বক্তব্য মাথায় আনলে পাখিদেরকে ডায়নোসর থেকে বাদ দিতে হয়। তাই পাখিরা ডাইনোসর নয়, এরা বিলুপ্ত।


সূত্র:

বিজ্ঞানকথন ই ম্যাগাজিন

উইকিপিডিয়া

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন