| সোশ্যাল মিডিয়ায় আসক্ত! |
সোশ্যাল মিডিয়াকে বাস্তব জীবনের সাথে তুলনা করা বন্ধ করুন নিজের পরিবার আত্মীয় স্বজনদেরকে সময় দিন। মনে রাখবেন পরিবারকে হারানোর মতো কষ্ট আর এই দুনিয়াতে নেই 🥲।
প্রায় এক-তৃতীয়াংশ আমেরিকানরা ভাবছেন সোশ্যাল মিডিয়া তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর ব্যাপারটি আমেরিকান সাইক্রিয়াটিক এসোসিয়েশনের নতুন জরিপ থেকে জানা গেছে। এই জরিপের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ মনে করেন , সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যাপক ব্যবহারের কারণেই সামাজিক ও মানসিক বিষন্নতার সৃষ্টি হচ্ছে। এই নিয়ে অনেক গবেষণা করা হয়েছে।
Jelena Kecmanovic, পেশায় একজন মনস্তাত্ত্বিক, তাঁর রোগীদের জীবনে সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যাবহার গবেষণা করে মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখার ৫টি উপায় জানিয়েছেন । যা আমরা আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করার চেষ্টা করছি।
১) কখন কোথায় সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করা যাবে তা নিয়ে একটু ভাবুন বা নিয়ন্ত্রণ করতে শিখুন:
অধিক সময় সোশ্যাল মিডিয়াতে ব্যয় করা ব্যক্তি জীবনে প্রভাব ফেলতে পারে। আপনি যার সাথে বা তাদের সাথে অধিক পরিমাণ কথা বলছেন সে হয়তো আপনার প্রতি বিরক্ত হয়ে যেতে পারে বা আপনাদের সম্পর্কের সমস্যারও সৃষ্টি হতে পারে। তাই বিরতি রাখা ও জরুরি। তবে আসল কথাটা এটা নয়। আসল কথা হলো এটাই যে, আপনি যদি দিনের বেশিরভাগ সময় সোশ্যাল মিডিয়াতে ব্যয় করেন তাহলে হয়তো আপনি আপনার পরিবারকে যথেষ্ট সময় দিতে পারবেন না। আর আমাদের জীবনে পরিবার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই পরিবারকে যথেষ্ট সময় দেওয়া উচিত। আর আরেকটি বিষয় সোশল মেডিয়া যাতে আপনার কাজে ব্যাঘাত বা বিশ্রামে ব্যাঘাত ঘটাতে না পারে সেজন্য অবশ্যই আপনি আপনার মোবাইল ফোন বা ল্যাপটপ আপনার কাছ থেকে দূরে রাখবেন যখনই আপনি বিশ্রাম করবেন বা কাজে ব্যস্ত থাকবেন।
Read more: মুলা খাওয়ার উপকারিতা। - মায়াবী জগত
২) নিজের কর্মকাণ্ড ও অনুভূতির প্রতি নজর দিন:
আপনি যে ধারাবাহিকভাবে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করছেন তা ব্যবহার করতে আপনার কেমন লাগছে তা নিয়ে একটু গবেষণা করুন। খেয়াল করুন প্রতিটা সেশনের আগে এবং পরে কেমন লাগছে। দেখবেন যে টানা ৪৫ মিনিট ফেসবুক চালানোর চেয়ে মাঝে মাঝে অল্পসময় চালানোতে বেশি ভালো লাগছে। যদি মনে করেন যে মাঝরাতে অনেক সময় ধরে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করতে বিরক্ত লাগছে তবে রাত দশটার পর ফেসবুককে চিরতরে বিদায় করে দিবেন।
Read more: কেন এতো সহজে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করল রাশিয়া! - মায়াবী জগত
৩) নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন "কেন ব্যবহার করছেন"?
মাঝে মাঝে অতিরিক্ত সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করার পর নিজের কাছে নিজে প্রশ্ন করুন যে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে আপনার কি লাভ হচ্ছে? সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রথমেই যদি টুইটারে তাকান তবে নিজেকে জিজ্ঞেস করুন কেন টুইটারে এসেছেন? ব্রেকিং নিউজের খবর পেতে নাকি যে দিনটার মুখোমুখি হতে ভয় পাচ্ছেন তার থেকে মুক্তি হিসেবে শুধু শুধু স্ক্রল করছেন? আপনি কি খেয়াল করেছেন, যখনই আপনার সামনে কঠিন কোনও কাজের দায়িত্ব আসে তখনই আপনার ইন্সটাগ্রাম চালানোর তীব্র আকাঙ্ক্ষা জাগে। সাহসী হন আর নিজের সাথে সৎ হন। যেক’বার সোশ্যাল মিডিয়া ব্রাউজ করতে মোবাইলে হাত চলে যাচ্ছে , ততবার নিজেকে প্রশ্ন করুন “আমি এটা কেন করছি?” আপনি আপনার জীবন থেকে কী পেতে চান তা ভাবুন। নিজের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করুন নিজের পরিবারের কথা চিন্তা করুন।
৪) সোশ্যাল মিডিয়ার কিছু বন্ধুদের বাদ দিন।
সোশ্যাল মিডিয়াতে যে সব বন্ধুদের সাথে তেমন কথা হয় না বা তাদের সাথে তেমন যোগাযোগ হয়না তাদের ফ্রেন্ডলিস্ট থেকে রিমুভ করে দিন। সময়ের পরিবর্তনে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করতে করতে আমাদের অনেক বন্ধু বা ফ্রেন্ড হয়ে যায়। স্যার আপনি বিভিন্ন পেজ বা বিভিন্ন গ্রুপে যুক্ত থাকেন। আপনার কাছে যে পেজটি আপনার জ্ঞান বাড়াতে সাহায্য করে বা আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ সেসব পেজকেই ফলো করুন। অনুরূপভাবে সে সব ফ্রেন্ডদের আনফ্রেন্ড করে দিন যেসব ফ্রেন্ড যদি আপনার কোনো উপকার হবে না। মাঝে মাঝে নিজেকে নিয়ে ভাবতে থাকুন। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, ফেসবুকে বন্ধুদের জীবনযাপন অন্যান্য কন্টেন্টের তুলনায় জীবনে বেশী নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এসব বন্ধুদের ফেসবুক থেকে বাদ দিন আর যেসব সাইটের কন্টেন্ট অনুপ্রেরণা-দায়ক, অবিশ্বাস্য, মজার তাদের সাথে যুক্ত হন।
Read more: ফুঁ দিয়ে কেকের মোমবাতি নেভালে কি হয়? - mayabee jagat - মায়াবী জগত
৫) সোশ্যাল মিডিয়াকে বাস্তব জীবনের সাথে তুলনা করা বন্ধ করে দিন 🖐️।
এমন ভাবে ফেসবুক বা অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া চালাবেন না যাতে আপনি আপনার বাস্তব জীবন থেকে হারিয়ে যান। সবার আগে খেয়াল রাখবেন আপনার বাস্তব জীবনের। এমনভাবে ফেসবুক চালাবেন না যাতে মাসের পর মাস চলে যায় তবু আপনার নব্জাতক ভাগ্নেকে দেখার সময় আপনার হয়ে ওঠে না। বন্ধু বান্ধবী বা কলিগের সাথে ট্যুইটিং বা ম্যাসেজিং করা মজার হতে পারে কিন্তু মনে রাখবেন পরিবার কে হারানোর দুঃখের থেকে বেদনা আর কোন কিছু হয়না।
তো বন্ধুরা সোশ্যাল মিডিয়া যে শুধু আমাদের ক্ষতি করে থাকে তা কিন্তু ভুল ধারণা। সোশ্যাল মিডিয়া গুলো আমাদের নানাভাবে সাহায্য করে যাচ্ছে। কিন্তু সমস্যা হল আমরা সোশ্যাল মিডিয়াকে অতিরিক্ত ব্যবহার করে থাকি বা বাস্তব জীবনের সাথে তুলনা করে থাকি। তাই আমাদের অবশ্যই উচিত পরিমিত সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করা। যাতে নিজের জীবনকে ধ্বংস বা অন্যের জীবনকে ধ্বংস না করি। সবাই সুস্থ থাকিস সুস্থ থাকতে দেই। আশা করছি এই পাঁচটি ঘরোয়া পদ্ধতি আপনার উপকারে আসবে। আশা করছি এই পাঁচটি কথা আপনাকে মটিভেট করবে এবং আপনি আপনার জীবনকে পরিবর্তন করতে পারবেন।
ধন্যবাদ।
তথ্যসুত্র:
কিউরিসিটি ডট কম
Keyword:
সোশ্যাল মিডিয়া, সোশ্যাল মিডিয়া থেকে দূরে থাকুন, কিভাবে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে দূরে থাকবেন, কিভাবে মানসিক স্বাস্থ্যের পরিচর্যা করবেন, কিভাবে পরিবারকে সময় দেবেন, ফেসবুক, ফেসবুক ব্যবহার বন্ধ করবেন যেভাবে