আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে Join করুন! এখানে আপনি বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও রহস্য বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য জানতে পারবেন। Join Now

নোটিশ

এসো, যদি জানতে চাও!

ইসরায়েলে দেখা মিললো জলপরীর(Mermaid)। জানুন বিস্তারিত | Mermaid Found | মায়াবী জগত

২০০৯ সালে ইসরাইলের সরকার ঘোষণা করেছিল, যে ব্যক্তি জলপরীর ছবি তুলে আনতে পারবে তাকে ৭৪ লক্ষ টাকা পুরস্কার দেয়া হবে।

 

জলপরী

২০০৯ সালে ইসরাইলের সরকার ঘোষণা করেছিল, যে ব্যক্তি জলপরীর ছবি তুলে আনতে পারবে তাকে ৭৪ লক্ষ টাকা পুরস্কার দেয়া হবে।


9 জানুয়ারী চৌদ্দশো তিরানব্বই খ্রিস্টাব্দে পৃথিবীর সবচেয়ে মহান অনুসন্ধানকারীর মধ্যে একজন খ্রিস্টোফার কলম্বাস, তার ডাইরিতে Mermaid-র কথা উল্লেখ করেন, যা পুরো পৃথিবীকে হয়রান করে দিয়েছিল।


কলম্বাস তার ডাইরিতে ভ্রমণের সমস্ত কাহিনী লিখতেন, কিন্তু তার মতে ৯ জানুয়ারী চৌদ্দশো তিরানব্বই খ্রিস্টাব্দে (ডোমিনিকান রিপাবলিক থেকে ফেরার সময়) সাগরের মধ্যে ৩ মার্মিডকে সাঁতার কাটতে দেখেছেন। তার বর্ণনা অনুসারে তিনটি জীব জলের উপর ধীরে ধীরে সাঁতার কাটছে এবং তাদের নিচের শরীর মাছের লেজের মতো আর উপরের অংশটা মানষের মতো। কিন্তু তিনি এটাও বলেছেন, যেমনটা ইতিহাস মার্মিডকে বর্ণনা করেছে এটা ঠিক তার বিপরীত, একদম দানবের মতো দেখতে। শরীর অনেক ভয়ানক। বলে রাখা ভালো, ইতিহাসে মার্মিডকে সুন্দর পরী হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। কলম্বাস এক মহান অনুসন্ধানকারী ছিলেন যিনি আমেরিকার মতন এক মহাদ্বীপের খোঁজ করেছেন। যার জন্য তার এই ডাইরির বর্ণনাকে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভাবে নেওয়া হয়েছে। বিজ্ঞানীরা ধারণা করেছেন কলোম্বাস হয়তো কিছু জীবকে দেখেছেন কিন্তু ওটা মার্মিড ছিল না, হয়তো জলের ভিতর বসবাসকারী ম্যামলস মন্টিস হতে পারে। মন্টিসের চোখ মানুষের মতো দেখতে, লেজ ঠিক মার্মিড-র মতো দেখতে জীবের মতো। এই সামুদ্রিক জীবকে যদি দূর থেকে দেখা যায় তবে একে মার্মিড ভাবার ভুল হতে পারে।


বিভিন্ন কথা-উপকথা অনুসারে মার্মিড এক সামুদ্রিক জীব, যার উপরের শরীর এক মেয়ের আর নিচের শরীর এক মাছের। মার্মিডকে দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগর, দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগর ও ইন্ডিয়ান মহাসাগরে পাওয়ার দাবি করা হয়। বেশিরভাগ উপকথায় মার্মিডকে সুন্দর্যের প্রতীক বলা হয়েছে। আবার কিছু উপকথা একে দানবের মধ্য এক ভাবা হয়, যার মুখ দেখতে খুব বিশ্রী ও ভয়ানক। বলা ওই মার্মিড জলের মধ্য পাথরের উপর বসে থাকে, আর নিজে নিজেকে জলের মধ্য দেখে, নিজেই নিজের প্রশংসা করতে থাকে। কিছু উপকথায় পুরুষ মার্মিডও উল্লেখ করা হয়েছে, যাকে মারম্যান বলা হয় কিন্তু একে মার্মিদের মতো খুব সুন্দর বলা হয়নি বরং খুব ভয়ানক অসুন্দর দানব রূপে বর্ণনা করা হয়েছে।


শুধু কলম্বাস একমাত্র ব্যাক্তি নন যিনি মার্মিডকে দেখার দাবি করেছেন। কলম্বাসের আগে চৌদ্দশো ত্রিশ খ্রিস্টাব্দে নেদারল্যান্ডের এডামে এক ভয়ঙ্কর সমুদ্রি তুফান সবকিছু এলোমেলো করে দিয়েছিলো। যার ফলে পুরো শহরকেই জলস্বাসের ধাক্কা সহ্য করতে হয়েছে। সেখানে কিছু ছেলে দাবি করেছিল, তারা মার্মিডের মতো একটি জীবকে সমুদ্রের তীরে মৃত অবস্থায় দেখেছে। যার শরীর পাথরের সাথে ধাক্কা খেয়ে খেয়ে সম্পূর্ণ খারাপ হয়েছে।


বর্তমান পৃথিবীতে অনেকেই মার্মিডের অস্তিত্ব আছে বলে দাবি করেন, তাদের মতে মার্মিড দেখতে হয়তো এমনটা নয় যেমনটা ইতিহাস বর্ণনা করে। হতে পারে তাদের শরীরের উপরের অংশ মানুষ নয় কিন্তু মানুষের মতো দেখতে। কিছু মানুষ এরকম থিওরিও দেয় যে, সমুদ্রে বসবাসকারী ডলফিন এবং হুইলস মানুষের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি বন্ধুত্ত্বপূর্ণ, কারণ সমুদ্রের মধ্য এই জীব নিশ্চই মার্মিডকে দেখে থাকবে যার কারণে সে মানুষকেও মার্মিড ভেবে ভুল করে।


বর্তমান সময় মার্মিডকে ঘিরে অনেক কথাই উঠে এসেছে। ইন্টারনেটে জনপ্রিয়তা অর্জন করার জন্য মানুষ অনেক মার্মিড সম্বন্ধে ফটো পোস্ট করে। তবে এর নব্বই শতাংশ ফটোই মিথ্যা প্রচার করে বাকি যে সত্য খবর পাওয়া যায় তা সত্যি ভয়নক কিছু।


দুই হাজার নয় শালে ইসরাইলের এক শহর কেলিয়েড এ এক মার্মিডকে দেখার দাবি করা হয়। আর এমন দাবি করার সংখ্যা প্রায় হাজারের উপরে হবে। এমনকি অন্য দেশের নাগরিক যারা ঘুরতে এসেছে তারাও মার্মিডকে দেখার দাবি করেছে। ইসরাইলের মানুষের বর্ণনা অনুসারে এই মার্মিডকে শুধু সূর্যস্তোর পর সন্ধ্যায় দেখা যায়। মার্মিড দেখার ঘটনা এতটাই বেড়ে গিয়েছিলো যে, ইসরাইলের সরকার ঘোষণা করলো যে মার্মিডের একটি ফটো তুলতে পারবে তাকে চুয়াত্তর লাখ টাকা দেওয়া হবে। কিন্তু আজ পর্যন্ত কেউ এই টাকা জিততে পারেনি।


দুই হাজার বারো শালে জিম্বাবুয়ের কোকি শহরে এক বাঁধ বানানো শ্রমিকরা, বাঁধ বানানোর অর্ধেক কাজ করে আর কাজ করতে রাজি হয়নি। আধিকারিকদের অনেক চেষ্টার ফলেও তারা কাজে ফিরতে চায়নি। শ্রমিকরা বলে, ওই নদীতে মার্মিড বসবাস করে, যারা বাঁধের কাজ বন্ধ করার জন্য শ্রমিকদের মারতেও পারে। বেশিরভাগ শ্রমিকই মার্মিডকে দেখেছে বলে দাবি করেছে। বাঁধের কাজ পুরা করার জন্য আলাদা শহর থেকে শ্রমিক নিয়ে আসা হলো কিন্তু তারাও ১ সপ্তাহ কাজ করার পর কাজ ছেড়ে দিলো। তারাও রাতের সময় ওই নদীতে এক মার্মিড এর মতো জীবকে দেখার দাবি করেছে। পরিবর্তিতে বিদেশ থেকে শ্রমিক দিয়ে কাজটা পুরা করেছে। তবে কাজটা শুধু দিনের বেলায় হয়েছে। বাঁধের কাজ সম্পর্ণ হয়েছে কিন্তু মার্মিডের আতঙ্ক আগের চেয়ে বেশি হয়েছে। অনেক মানুষ নদীর ধারে মার্মিদের হামলা করার দাবি করেছে। দুই হাজার পনেরো শালে নদীর ধার থেকে দুটি ছেলের নিখোজ হয়ে যাবার ঘটনাও সামনে আসে।


ইন্দোনেশিয়ার কায় দ্বীপে জাপানের সেনাবাহিনীদের সঙ্গেও এমন ঘটনা ঘটেছে। তাদের বর্ণনা অনুসারে দ্বীপের সাথে বালির চড়ে তারা এক মার্মিডের মৃত দেহ পেয়েছে। ওখানকার স্থানীয় লোক এই জীবটিকে দেখে বলে একে তারা ওরাংকিয়াং নামে জানে। ওরাংকিয়াং এর প্রচুর কাহিনী ওই অঞ্চলের স্থানীয় লোকের মুখে মুখে আছে।


যদি বৈজ্ঞানিকভাবে দেখা হয়, বাস্তবেই কি মার্মিডের মতন জীব এই পৃথিবীতে আছে ? মহাসাগরের তলদেশে মানুষের মতন শরীর কখনোই জলের চাপ সহ্য করতে পারবে না। হয়তো তারা দেখতে সম্পর্ণ আলাদা যেমনটা বর্ণনা করা হয় তার চেয়ে সম্পর্ণ ভিন্ন যাকে কখনো খোঁজার চেষ্টাই করা হয়নি। মনে রাখবেন সাগরের মাত্র ৫ শতাংশ আমরা জানি। এখনো সাগরের অনেক জীব সম্পর্কেই আমরা জানিনা।


তো মার্মিড সম্পর্কে আপনাদের কি ধারনা? তা অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন।


Keywords: 

mermaid, mermaid history, How mermaids are born, Are mermaids real Wikipedia, How to become a mermaid, Mermaid culture, Mermaid characteristics, জলপরী কি সত্যি আছে, জলপরী কিচ্ছা, জলপরী গল্প, 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন